ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকা করার প্রস্তাব

ব্যাংকবীমাবিডি || ২০২১-০৩-২৫ ২২:২৯:৩৭

image

করোনাভাইরাসের প্রভাবে মানুষের আয় কমেছে। তাই ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ এবং নারী ও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বদের জন্য ৫ লাখ টাকা করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব করেছেন অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে ইআরএফের পক্ষে এ প্রস্তাব করেন সংগঠনটির সভাপতি শারমিন রিনভী।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সভায় এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য (কাস্টমস পলিসি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাট নীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ ইআরএফের কার্যনির্বাহী পরিষদসহ সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী রাজস্ব আদায় বাড়ানো ও বর্তমান পরিস্থিতিতে করদাতাদের সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন। ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা এবং ৬০ বছরের বেশি ব্যক্তিদের জন্য ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেন তিনি।

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এনবিআরকে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশেষত ভবিষ্যতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রফতানি বাণিজ্যে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) যেতে হবে। এজন্য সম্ভাব্য শুল্কছাড়ের লক্ষ্যে এনবিআরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ সময় বাজেটে দেশীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করার লক্ষ্যে স্থানীয় শিল্পকে গুরুত্ব দিতে চায় বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, স্থানীয় শিল্পকে উৎপাদনে সহায়তা দিতে চাই। কোন জায়গায় সহায়তা দিলে দেশীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং ভিন্ন ভিন্ন পণ্য উৎপাদন যাতে বাড়ে, সেটি দেখছি। এ সময় তিনি রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরের নেয়া কিছু পদক্ষেপও তুলে ধরেন। বিশেষত করযোগ্য আয় রয়েছে, কিন্তু করের আওতার বাইরে রয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের করের আওতায় আনতে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এনবিআর সংযুক্ত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এরপর অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম ফরহাদ (অব.) বলেন, সরকার প্রতি বছর মোবাইল খাতের ওপর নতুন করে করের বোঝা চাপিয়ে দেয়। এ পরিস্থিতির অবসান চাই এবং একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় থাকুক সেই প্রতিশ্রুতি আমরা সরকারের কাছে চাই। মনে রাখা দরকার, করোনাকালে এই মোবাইল খাতই দেশের অর্থনীতির চাকাকে বেগবান রেখেছে। আর প্রতি বছর আনুমানিক ৭ শতাংশ হারে জিডিপিতে অবদান তো রাখছেই।

তিনি আরো বলেন, আগামী বাজেটের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বেশকিছু সুপারিশ করেছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মোবাইল সেবাদাতারা প্রফিট না করলেও যে ন্যূনতম ২ শতাংশ হারে টার্নওভার ট্যাক্স প্রদান করে তা প্রত্যাহার বা যৌক্তিক করা। অতালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত অপারেটরের করপোরেট ট্যাক্স ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২৫ শতাংশ করা। সব ইনট্যাঞ্জিবল সম্পদের ওপর এমোটাইজেশন সুবিধা প্রদান করা, মোবাইল সিমের ওপর যে ২০০ টাকা কর আছে তা বিলুপ্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতি ১০০ টাকা টক টাইমের ওপর ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর যে ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভ্যাট, এসডি ও সারচার্জ আছে তা কমিয়ে যৌক্তিক করার সুপারিশ করা হয়েছে।

অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com

ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১