এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য ব্যবস্থা ত্বরান্বিতকরণের লক্ষ্যে সম্পাদিত ‘দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট অন ফ্যাসিলিটেশন অব ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ গতকাল শনিবার থেকে কার্যকর হল। ফলে কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত ডাটা ও ডকুমেন্ট আদান-প্রদান সহজ হবে। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৬ সালে ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকভুক্ত (ইএসসিএপি) সদস্য দেশগুলো ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তিটি গ্রহণ করে। কাগজবিহীন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত ডাটা ও ডকুমেন্ট আদান-প্রদান সহজীকরণের লক্ষ্যে এ চুক্তি গৃহীত হয়। বর্তমানে ইএসসিএপিভুক্ত ৫৩টি সদস্য দেশ এ চুক্তিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। আজারবাইজান, বাংলাদেশ, চীন, ইরান, ফিলিপাইন এরই মধ্যে চুক্তিটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনুসমর্থন করে চুক্তির পক্ষ হয়েছে। এছাড়া আর্মেনিয়া ও কম্বোডিয়া চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ইএসসিএপিভুক্ত অন্যান্য দেশ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, কভিড-১৯-এর ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য ব্যবস্থার (আমদানি-রফতানি) ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা দূরীকরণে পেপারলেস ট্রেড বা ডিজিটাল ট্রেড পদ্ধতি এরই মধ্যে সমাদৃত হয়েছে। কভিড-উত্তর বিশ্ববাণিজ্যে ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড ব্যবস্থা বাণিজ্য সহজীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এছাড়া ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড দেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, ই-কমার্স ও ডিজিটাল অর্থনীতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্টটি বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্পাদনের সময় ও ব্যয় হ্রাস পাবে।
ইউনাইটেড নেশন্স ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (ইউএনইএসসিএপি) প্রকাশনা হতে জানা যায়, ডব্লিউটিও ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্ট ও ইউএনইএসসিএপি ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ বাণিজ্য বাবদ খরচ ৩৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে, যার আর্থিক মূল্য বার্ষিক দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
উন্নয়নশীল দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের ফলে সম্ভাব্য বাণিজ্য সংকোচন মোকাবেলায় বাংলাদেশ এ অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায় কারিগরি সহযোগিতা পেতে পারে। চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশ অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে। এছাড়া সরকারের ওয়ান স্টপ সার্ভিস এবং ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় হবে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী উচ্চ আয়ের দেশ (উন্নত বাংলাদেশ) গঠনের স্বপ্ন ত্বরান্বিত হবে।
জানা গেছে, ক্রস-বর্ডার পেপারলেস ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সহজ ও নমনীয়। ডিজিটালাইজেশনের যেকোনো পর্যায়ে উন্নত ও উন্নয়নশীল নির্বিশেষে ইএসসিএপিভুক্ত যেকোনো দেশ এ অ্যাগ্রিমেন্টটিতে যোগ দিতে পারে। অ্যাগ্রিমেন্টটি কার্যকর করা হলে ডব্লিউটিও টিএফএ এবং ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ পদ্ধতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো ক্রস-বর্ডার ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টে যোগ দিয়ে বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। একই সঙ্গে এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো ই-কমার্স ও ডিজিটাল ইকোনমির ক্ষেত্রে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারবে।
অফিস : দক্ষিণ বনস্রী, ঢাকা। ই-মেইলঃ bankbimabd@gmail.com, editor.bankbimabd@gmail.com
ফোন: +৮৮০১৭১৮৬২১৫৯১